`লস্ট ট্যালেন্টস’: সড়কে হতাহতদের স্মরণ ও নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ

বিডি নিউজ ২৪ আমিনুল ইসলাম সুজন প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১:১২

প্রতিবছর নভেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী ‘ওয়ার্ল্ড ডে অফ রিমেমব্রান্স ফর রোড ট্রাফিক ভিকটিমস’ অর্থাৎ সড়কে হতাহতদের স্মরণে একটি বৈশ্বিক দিবস উদযাপিত হয়। বরাবরের মতো এ বছরও নভেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার হিসেবে ১৬ নভেম্বর দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।


১৯৯৩ সালে যুক্তরাজ্যে সড়কে হতাহতদের জন্য কাজ করা দাতব্য সংস্থা ‘রোডপিস’ এ দিবস উদযাপন শুরু করে। ১৯৯৪ সাল থেকে ‘ইউরোপিয়ান ফেডারেশন অব রোড ট্রাফিক ভিকটিমস’—এর মাধ্যমে সমগ্র ইউরোপে এবং ১৯৯৫ সাল থেকে আফ্রিকা, এশিয়া, আমেরিকা মহাদেশে দিবসটি ছড়িয়ে পড়ে।


২০০৪ সালে জাতিসংঘ ‘রোড সেফটি কোলাবোরেশন ফোরাম’ প্রতিষ্ঠা করে এবং ২০০৫ সালের ২৬ অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে বৈশ্বিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ফলে, এর আগে যেসব দেশে দিবসটি উদযাপিত হয়নি, সেসব দেশেও উদযাপন শুরু হয়। বৈশ্বিক পরিসরে সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে এটি এখন প্রধান বৈশ্বিক দিবস হিসাবে উদযাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এ দিবসটি উদযাপন করছে।


বাংলাদেশে গত ১৫ বছর ধরে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর উদ্যোগে সীমিত পরিসরে দিবসটি উদযাপন হলেও এখন অনেকগুলো সরকারি-বেসরকারি সংস্থা উদযাপন করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), রোড সেফটি কোয়ালিশনের সদস্য সংগঠনসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এ দিবসটি উদযাপন করছে। ২০২৩ সাল থেকে ‘ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি’ এবং ‘ভাইটাল স্ট্রাটেজিস’—এর কারিগরি সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) এ দিবস উদযাপন করে আসছে।


এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য—‘লস্ট ট্যালেন্টস’। সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু মানুষই অকালে মারা যায় না, এতদসঙ্গে তাদের জ্ঞান, মেধা, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং সমাজে এসবের সম্ভাব্য প্রতিফলনের মতো বিষয়গুলোরও বিনাশ ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় সবচে’ বেশি মারা যায় অল্পবয়সী, তরুণ ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। যারা পরিবার ও সমাজে অনেকদিন ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু সড়কে অকালমৃত্যুর কারণে তাদের সম্ভাব্য অবদান থেকে শুধু পরিবার নয়, রাষ্ট্রও তাদের সম্ভাব্য সৃজনশীলতা ও উৎপাদনশীলতা থেকে বঞ্চিত হয়। এই হারিয়ে যাওয়া মানুষ ও তাদের জ্ঞানের অপমৃত্যুকে এবারের প্রতিপাদ্যে তুলে ধরা হয়েছে।


প্রতিনিয়ত সড়কে মানুষ মারা যাচ্ছে, যাদের অনেকে অসম্ভব মেধাবী হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। যেমন: সাংবাদিক মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদ; যাদের আমরা ২০১১ সালে হারিয়েছি। বাংলাদেশে টিভি সাংবাদিকতায় আধুনিকতা ও সৃজনশীলতার অন্যতম নেপথ্য কারিগর ছিলেন মিশুক মুনীর। অনেক প্রতিভাবান সাংবাদিকও তৈরি করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে শিল্পে তারেক মাসুদ একজন অসাধারণ পরিচালক ছিলেন। তার নির্মিত চলচ্চিত্র দেশে ও বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি ও তার চলচ্চিত্র অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ করেছে। বিপরীতমুখী গাড়ির চালক অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর ‘কারণে’ আমরা তাদের হারিয়েছি।


সড়কে এমন অনেক মারা গেছেন, যাদের অনেকে সমাজ ও দেশকে অনেক কিছু দেওয়ার মতো বয়সে ছিলেন। যেমন: সংগঠক ও রাজনীতিক আরিফুল ইসলাম ও শিল্পী সৌভিক অর্জুন। আরিফুল ইসলাম একজন প্রতিভাবান সংগঠক ছিলেন। নেতৃত্ব গুণের কারণে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের একজন সাধারণ সমর্থক থেকে কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়েছিলেন। ২০১০ থেকে ২০২৩ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আন্দোলনসহ জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন আরিফুল ইসলাম। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেরও অগ্রণী সৈনিক ছিলেন তিনি। একটি দ্রুতগতির ট্রাকের ধাক্কায় আরিফ ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু কবি ও লেখক সৌভিক অর্জুনসহ অকালে মারা যান। সৌভিকের অসাধারণ কিছু গান ও কবিতা রয়েছে। তার লেখা নিয়ে একাধিক বইও রয়েছে। এ দু’জন প্রতিভাবান মানুষের অকালমৃত্যু শুধু তাদের পরিবারের জন্যই নয়, দেশেরও জন্যও বিরাট লোকসান।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও